ব্রেন স্ট্রোক কেন হয় - ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়
ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এর কারণ জানতে পারলে এখান থেকে আমরা নিজেকে মুক্ত রাখতে পারব। তাই ব্রেন স্ট্রোক এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে জানতে হবে ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এই বিষয়ে জানতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এ বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আপনি যদি ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এর কারণ জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন দেরি না করে ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ ব্রেন স্ট্রোক কেন হয় - ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়
- ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়
- ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়
- ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ
- ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা
- ব্রেন স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা
- স্ট্রোক হলে করনীয়
- ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়
- শেষ কথা
ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়?
ব্রেন স্ট্রোক চিকিৎসা জানার আগে আমাদেরকে প্রথমেই ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এর কারণ সম্পর্কে জানতে হবে। এ রোগের কারণ যদি আমরা বের করতে পারি তাহলে খুব সহজেই এই মারাত্মক রোগ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারব। আপনাদের স্বাস্থ্যের সুবিধার্থে ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? তা উল্লেখ করা হলো।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের খিচুনি হওয়ার ৫ টি লক্ষণ - খিচুনি হওয়ার নয়টি লক্ষণ
ব্রেন স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। ব্রেন স্ট্রোক আমাদের মস্তিষ্কের রক্তনালীর জটিলতার কারণে হয়ে থাকে। রক্তনালীতে কখনো রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার ফলে ব্রেন স্ট্রোক হতে পারে। এছাড়া ব্রেনের একটা অংশের সক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
রক্তনালীর কোন অংশ কোন কারণে যদি ছিড়ে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে তাহলে ব্রেনের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে যার ফলে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সাধারণত ওপরের কারণ এর ফলেই আমাদের ব্রেন স্ট্রোক ঘটে থাকে।
ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়?
ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এবং ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনাকে ধারণা রাখতে হবে। যেহেতু এটি একটি মারাত্মক রোগ তাই এখান থেকে বাঁচতে হলে ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়? সেই সম্পর্কে জানা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ব্রেন স্ট্রোক হলে আমাদের শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে যায়। আমরা আমাদের শরীরকে নিজের কন্ট্রোলে রাখতে পারি না।
ব্রেন স্ট্রোক হলে অনেকেই ব্লাইন্ডনেস হয়ে যায়। চোখে সম্পূর্ণ অন্ধকার দেখে থাকে। ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার ফলে মুখের একটা অংশ সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়ে। ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার ফলে হাত এবং পা দুর্বল হয়ে পড়ে। কথা বলতে পারা যায় না। কথা বললেও সে কথার মানে কেউ বুঝতে পারে না। কথার মধ্যে জড়তা সৃষ্টি হয়ে যায়।
ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ
ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ রয়েছে যেগুলো আপনার সাথে ঘটলে বুঝতে হবে আপনার ব্রেন স্ট্রোক হতে চলেছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ গুলো খুব কম দেখা যায়। সরাসরি ব্রেন স্ট্রোক হয়ে থাকে যার ফলে আগে থেকে এটা অনুমান করা যায় না।
ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণঃ
- আমাদের হাত পা অথবা মুখের একটি বিশেষ অংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। আমরা ইচ্ছা করলেও সে অংশ নাড়াচাড়া করতে পারি না।
- হঠাৎ করেই কথা বলতে অসুবিধা হওয়া। কথা বলতে পারা কিন্তু কথার মধ্যে জড়তা থাকা।
- একটি চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া অথবা উভয় চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া।
- হঠাৎ করে মাথা ঘুরে ওঠা, হারতে অসুবিধা হওয়া, নিজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা দাঁড়াতে না পারা।
- মাথায় প্রচন্ড পরিমাণে যন্ত্রণা করা।
ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা
ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা সবার থেকে আলাদা রাখতে হবে। যেহেতু ব্রেন স্ট্রোক একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগের উন্নত চিকিৎসা করে ভালো করা সম্ভব আবার ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা সঠিকভাবে রেখে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনার সুবিধার্থে ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা নিজে উল্লেখ করা হলোঃ
আরো পড়ুনঃ ১৫ টি উপায়ে যেভাবে লম্বা হওয়া যায় - দ্রুত লম্বা হওয়ার উপায়
সবুজ শাকসবজিঃ প্রতিদিন আপনার খাওয়ার তালিকায় সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে। সবুজ শাকসবজি বেশি খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। যেহেতু সবুজ শাকসবজি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে যার ফলে এর ঝুঁকি কমে যায়।
কলা খেতে হবেঃ কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। এটি খুবই পুষ্টি গুণসম্পন্ন একটি খাবার। পাকা করা খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কলার মধ্যে রয়েছে হার্টের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। ব্রেন স্টোক এ ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
টমেটো খেতে পারেনঃ পুষ্টি উপাদানের ভরপুর টমেটো। টমেটো থেকে আমরা পেয়ে থাকি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহযোগিতা করে এবং ব্রেন স্টোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
রসুন খেতে পারেনঃ আমরা জেনেছি যে রসুন অনেক উপকারী একটি খাবার। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে যার ফলে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
ব্রেন স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা
সঠিক সময়ে যদি ব্রেন স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা চিকিৎসা করানো হয় তাহলে এখান থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যেহেতু এটি একটি মারাত্মক রোগ তাই ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? এবং ব্রেন স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের ধারণা রাখতে হবে।
ব্রেন স্ট্রোক থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদেরকে বিভিন্ন করণীয় রয়েছে সেগুলো করতে হবে এছাড়া যেহেতু এই রোগের পূর্বে কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না তাই পূর্বে কোন ধরনের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। ব্রেন স্ট্রোক এর পরবর্তী চিকিৎসা করতে হবে। ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ গুরু প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে রোগীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
ব্রেন স্ট্রোক চিকিৎসার মধ্যে থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত। লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার পর থেকে তিন থেকে চার ঘন্টার মধ্যে শরীরের শিরার মধ্যে এগুলো দেওয়া হয়। রক্ত জমাট বেঁধে যে ব্লেকেজ তৈরি হয় তাকে দূর করার জন্য এই চিকিৎসাটি প্রদান করা হয়।
স্ট্রোক হলে করনীয়
স্ট্রোক হলে করনীয় রয়েছে যেগুলো লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে আমাদের করা উচিত। না হলে রোগী মারাত্মকভাবে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমরা ইতিমধ্যেই ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ গুলো উল্লেখ করেছি। সেই লক্ষণগুলো কখনো দেখা দিলে বুঝতে হবে স্ট্রোক হতে চলেছে। সেই সময় স্ট্রোক হলে করনীয় কারণে এগুলো আমাদের অবলম্বন করতে হবে।
এ সময় আমাদেরকে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। ঠান্ডা মাথায় জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অতিরিক্ত খারাপ অবস্থা হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে। সম্ভব হলে মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করে ব্রেন স্টোকের ধরন বুঝতে হবে। স্টক সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার জন্য অথবা মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণের জন্য।
ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়
ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় রয়েছে এ রোগ হওয়ার আগেই আমাদেরকে ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে যার ফলে আমরা উক্ত মারাত্মক রোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবো।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখাঃ ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ। তাই আমাদের যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদেরকে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যার ফলে ওষুধ সেবন প্রয়োজন হলে সেটি করতে হবে।
নিয়মিত শরীর চর্চা করাঃ আমরা যদি সব সময় শুয়ে বসে থাকি তাহলে আমাদের ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। তাই এখান থেকে দূরে থাকতে হলে আমাদেরকে নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে। নিয়মিত শরীর চর্চা করলে ব্রেন স্ট্রোক থেকে মুক্ত থাকা যাবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখাঃ অতিরিক্ত ওজন ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। তাই আমাদেরকে নিজেদের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। ওজন বেড়ে যায় এরকম কাজ করা যাবে না। যার ফলে নিয়মিত আমাদেরকে ব্যায়াম করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মাসিকের ব্যথা কমানোর ৫টি উপায় - মাসিকের ব্যথা কমানোর ৪টি ওষুধ
ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবেঃ অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান অথবা মদ্যপান করার ফলে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেহেতু ধূমপান এবং মদ্যপান আমাদের শরীরের ক্ষতি করে থাকে তাই এটা থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।
ব্রেন স্ট্রোক কেন হয় - ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়ঃ শেষ কথা
ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়? ব্রেন স্ট্রোক এর লক্ষণ, ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা, ব্রেন স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা, স্ট্রোক হলে করনীয়, ব্রেন স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাহলে এখান থেকে বেঁচে থাকার জন্য করণীয় গুলো অবলম্বন করুন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।১৬৮৩০