ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন - খাওয়ার পর দুর্বল লাগে কেন


ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? এ বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানব। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে। কিন্তু ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? এ বিষয় সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা থাকে না। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সূচিপত্রঃ ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন - খাওয়ার পর দুর্বল লাগে কেন

ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন - শরীর কাঁপে কেন

ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? আশা করি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য আপনি আমাদের এই আর্টিকেল ওপেন করেছেন। অনেকের অতিরিক্ত পরিমাণে ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে কিন্তু শরীর কাঁপে কেন? জানা থাকলে খুব সহজেই বাড়িতেই চিকিৎসা করা যায়। ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? শরীর কাঁপে এর অন্যতম কারণ হলো পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া, শরীরে পুষ্টির অভাব।

আরো পড়ুনঃ মাসিকের ব্যথা কমানোর ৫টি উপায় - মাসিকের ব্যথা কমানোর ৪টি ওষুধ

১। পরিমিত পরিমাণে ঘুম না হলে এ সমস্যাটি দেখা যায়। বর্তমান সময়ে আমাদের ঘুমের পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে যার ফলে আমরা রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমায় না। তাই ক্ষুধা লাগলে আমাদের শরীর কেঁপে ওঠে।

২। শরীরে যদি শক্তির পরিমাণ কম থাকে তাহলে এ সমস্যাটি দেখা যায়। শরীর যদি অতিরিক্ত পরিমাণের দুর্বল থাকে এবং কোন প্রকার শক্তি না থাকে তাহলে ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে।

৩। রাতে অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবার খেলে এবং ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে। শরীর কেঁপে ওঠার অন্যতম কারণ এটি।

৪। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক চলাকালীন অবস্থায় ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে। কারণ এই সময় ক্যালরি চাহিদা বেশি থাকে এবং ক্ষুধা পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

৫। পেটে কৃমি থাকলে অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপান করলে ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে।

৬। অতিরিক্ত পরিমাণে মানসিক চাপে থাকলে ক্ষুধা লাগলে শরীর কেঁপে ওঠে। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে চিন্তা এবং মানসিক চাপ আমাদের শরীরকে এমনিতে দুর্বল করে তোলে।

খাওয়ার পর দুর্বল লাগে কেন?

অনেকের প্রশ্ন খাবার পর দুর্বল লাগে কেন? আজকের এই আর্টিকেলে খাবার পর দুর্বল লাগে কেন? বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব। ক্ষুদা লাগলে শরীর কাপে কেন? এর কারণগুলো সম্পর্কে জেনেছি। খাবার পর দুর্বল লাগে কেন? এর কারণ উল্লেখ করা হলো।

আমরা জানি যে খাবার পর পেট ভরে গেলে তা মানুষের ভালো লাগার কথা কিন্তু অনেকের আছে যাদের খাওয়ার পর দুর্বল অনুভূত হয়। খাবার পর সেই খাওয়ার কে বিভক্ত করে লিভারের কাছে পৌঁছে দিতে অন্ত্রের অনেক বেশি রক্তের প্রয়োজন হয়। যে কারণে রক্তের উপর বেশি চাপ পড়ে। ফলে তখন রক্তচাপ কমে গিয়ে শরীরের ক্লান্ত বোধ করে এবং ঘুম পায়।

তাছাড়া মানুষের শরীরের প্রতিটি অঙ্গের আসলে দিন ও রাতে দুইবার বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। যাদের দুপুরে ঘুমানোর সুযোগ আছে তাদের ঘুমিয়ে নেওয়াটাই সবথেকে ভালো। তবে সেটা যেন আধা ঘন্টার বেশি না হয়। কারো সুস্থ মানুষ দিনে ঘুমালে বা বিশ্রাম নিলে এমনিতেই দুর্বল এবং ক্লান্ত লাগে। ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? এর অন্যতম কারণ হলো শরীরের দুর্বলতা।

ক্ষুধা কমানোর উপায়

ক্ষুধা কমানোর উপায় নিয়ে আমরা এখন আলোচনা করব। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে থাকে। যার ফলে তাদের ওজন অতিরিক্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পায় তাই এখন আমরা খোদা কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। তার নিচে আপনাদের জন্য ক্ষুধা কমানোর উপায় গুলো উল্লেখ করা হলো।

মধু - যারা মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য মিষ্টি চাহিদা মেটাতে মধু খাওয়া যেতে পারে। মধু ক্ষুধার হরমোন দমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে মধু খেলে মনে হয় যে অনেকক্ষণ পেট ভরা রয়েছে। তাই এক গ্লাস গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

ডিম খেতে পারেন - প্রোটিন ও চর্বি সমৃদ্ধ খাবার যা অনেকক্ষণ ক্ষুধা ভাবকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে বাড়তি খাবারের চাহিদা কমে যায়। তাই আপনি যদি ক্ষুধা কমাতে চান তাহলে ডিম খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ ১৫ টি উপায়ে যেভাবে লম্বা হওয়া যায় - দ্রুত লম্বা হওয়ার উপায়

ডাল খেতে পারেন - ডাল আঁশ সমৃদ্ধ খাবার এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার খাবারের চাহিদা কমাতে চান তাহলে ডাল খেতে পারেন।

খাবার আগে পানি পান করা - ক্ষুধা ভাব কমাতে হলে আপনি খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিন এতে করে আপনার খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার - আপনি যদি খাবার এর চাহিদা কমাতে চান তাহলে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন এবং সবজি রক্তের সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ভিনেগার - আপনি যদি খোদা কমাতে চান তাহলে ভিনেগার আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি থেকে শুরু করে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে ভিনেগার এর ভূমিকা রয়েছে অনেক।

ক্ষুধার হরমোন

ক্ষুধার হরমোন কোনটি এই বিষয় সম্পর্কে আপনি জানতে চান? আমরা জানি যে আমাদের দেহের সকল কার্যক্রম হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমাদের দেহের রং কি হবে চুলের রং কি হবে ক্ষুধা কেমন লাগবে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে হরমোন। তাই এখন আমরা ক্ষুধার হরমোন নিয়ে আলোচনা করব। ক্ষুধার হরমোন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

গ্রেলিন নামে একটি হরমোন আমাদের দেহে রয়েছে যা ক্ষুধার হরমোন নামে পরিচিত। আপনি যদি কোন একটি বেলার খাবার বাদ দেন তাহলে আপনার দেহে এই হরমোনটির মাত্রা বেড়ে যায় এবং এর সঙ্গে ক্ষুধা ও বেড়ে যায় ব্যাপকভাবে। এতে সামনে যে খাবার আসুক না কেন তা খাওয়ার লোভ সামলাতে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন এর অন্যতম কারণ হলো হরমোন সমস্যা।

এ হরমোনটি এমন আচরণ করে যার কারণে কোন একটি বেলা খাবার পুরোপুরি বাদ দিলে আপনার ওজন আরো বেড়ে যাওয়ার সংখ্যা থাকে। তাহলে আমরা জানলাম যে ক্ষুধার হরমোন নামে পরিচিত আমাদের দেহে গ্রেলিন হরমোন। যা আমাদের খোদা বৃদ্ধি এবং কম করতে সাহায্য করে থাকে।

ক্ষুধা না লাগার কারণ

ক্ষুধা না লাগার কারণ গুলো নিয়ে আমরা এখন আলোচনা করব। অনেক সময় আমাদের খাবার দেখলে অরুচি চলে আসে। কোন কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। সব থেকে বড় সমস্যা হলো এই সময় আমাদের ক্ষুধা একেবারেই লাগেনা। তাই এখন আমরা ক্ষুধা না লাগার কারণ নিয়ে আলোচনা করব। নিচে ক্ষুধা না লাগার কারণ গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

১। অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করলে ক্ষুধা লাগার পরিমাণ কমে যায়। কারণ ক্ষুধার অনুভূতি না থাকা গুরুতর শরীরের সমস্যার পূর্বাভাস হতে পারে। দীর্ঘদিন না খেয়ে থাকলে ক্ষুধার না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২। যদি আপনি খুব বেশি উদ্বেগী ও চিন্তাগ্রস্থ হয়ে থাকেন তাহলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। কারণ উদ্বেগ আমাদের শরীরে এমন একটি হরমোন নিঃসরণ করে যা আমাদের শরীরের হজম শক্তিকে অনেক ধীরগতি করে দেয় যার ফলে ক্ষুধা সহজে লাগে না।

৩। অবসাদগ্রস্ত হয়ে থাকলেও সহজে ক্ষুধা লাগে না। এটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা অবসরগ্রস্ত তাদের মস্তিষ্কে কোন কোন অংশে বিভিন্ন রকম ভাবে কাজ করে থাকে। যার ফলে ক্ষুধার অনুভূতি তাদের তেমনটা লাগেনা।

৪। শারীরিক অসুস্থতা থাকলে কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। বিশেষ করে সর্দি জ্বর কাশি হলে ক্ষুধা লাগার পরিমাণ অনেক কমে যায়। সর্দি হলে নাক বন্ধ হওয়া খাবারের গন্ধ না পাওয়া এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

৫। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় ক্ষুধা লাগার পরিমাণ কমে যায়। গর্ভাবস্থায় বদহজমের সমস্যা ও অনেক দেখা দিয়ে থাকে সেই কারণে অনেক সময় খেতে ইচ্ছা করে না।

কোন খাবার খেলে ক্ষুধা কম লাগে?

কোন খাবার খেলে ক্ষুধা কম লাগে? এ বিষয়ে জানতে চান? আমরা ইতিমধ্যেই ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? এ বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা কোন খাবার খেলে ক্ষুধা কম লাগে? সেই খাবারগুলো খেলে ওজন কম হয়। আমাদের আশেপাশে এরকম অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে আমাদের ক্ষুধা কম লাগে। অতিরিক্ত পরিমাণে ডিম এছাড়া মিষ্টি আলু খাওয়ার ফলে ক্ষুধা কম লাগে।

আরো পড়ুনঃ সকালে ব্যায়াম করার ১০টি উপকারিতা - সকালে ব্যায়াম করার ১০টি নিয়ম

যুক্তরাষ্ট্রের একটি ইউনিভার্সিটি গবেষণা করে দেখেছেন যে সকালের নাস্তায় ডিম খেতে পারেন ডিমের রয়েছে প্রয়োজনীয় সব অ্যামিও এসিড। ডিম প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় দীর্ঘক্ষন পেট ভরা রাখে এবং ক্ষুধা কম লাগাতে সাহায্য করে।

দৈনিক আধা চামচ তিসি খেতে পারেন। আপনি যদি ক্ষুধা কম লাগার খাবার খোজে থাকেন তাহলে তিসি নিয়মিত খেতে পারেন এটি ক্ষুধা কম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এছাড়া মিষ্টি আলু ও বিট রুটের মত খাবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আমাদের শেষ কথাঃ ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন - খাওয়ার পর দুর্বল লাগে কেন

প্রিয় পাঠক গণ আজকের এই আর্টিকেলে ক্ষুধা লাগলে শরীর কাপে কেন? খাওয়ার পর দুর্বল লাগে কেন? কোন খাবার খেলে ক্ষুধা কম লাগে? ক্ষুধা না লাগার কারণ, ক্ষুধার হরমোন, খোদা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি উক্ত বিষয়গুলো জানতে পেরেছেন। যদি না পড়ে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন ধন্যবাদ। ২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন